যে কারনেই হোক, বাংলাদেশে এখন যাদের বয়স ত্রিশের কম, তাদের সবচেয়ে বড় অংশটা রাজনীতি ঘৃনা করে। এই ঘৃনা আমাদের আগের প্রজন্মের রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক মানুষদের দুই হাতের কামাই। হলে সিট পাওয়ার বা মার্কেটে মার্কেটে চাদা তোলার সুবিধা না থাকলে যারা রাজনীতি ঘৃনা করে না তদেরও একটা বড় অংশ ঘৃনা করতো।
যেহেতু তরুণরা মোটের ওপর অরাজনৈতিক, তাই দেশে বিরোধী দলের রাজনৈতিক আন্দোলনগুলো হালে যথেষ্ট পানি পায় না, যৌক্তিক হলেও না, অযৌক্তিক হলে তো কথাই নাই।
তাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ভেবেছিল, অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে দেশে যে বৈষম্য, তার বিরুদ্ধে নিজের প্রয়োজনের গ্রাউন্ডে একটা লড়াই করবে।
পৃথিবীতে গত প্রায় আট দশ বছরে যত গণআন্দোলন হয়েছে, তার সবই অনলাইন থেকে দানা বেধেছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যমান বিরোধীদলীয় রাজনীতিবীদ-যাদের শরীরের বয়স তেমন বেশি না হলেও মনের বয়স অনেক বেড়ে গেছে, তারা এগুলো থেকে কিছু শেখেন না, আদতে তাদের শেখার ক্ষমতা শেষ হয়ে গেছে।
কোটা সংস্কারের এই অরাজনৈতিক আন্দোলন এখন যে উচ্চতায় পৌছেছে, সেই উচ্চতা ২০১৩ সালেও কোন রাজনৈতিক আন্দোলন অর্জন করতে পারে নাই, সেগুলা এত বেশি জনপ্রিয় অবশ্যই ছিল না।
কিন্তু এই আন্দোলন প্রথমে ঘোষনা দিয়ে থামানো হলো, এরপর থেকে এখন পর্যন্ত যা হলো-তাকে বলে ডিসেপশন, ডিভাইড এন্ড কঙ্কোয়ার পলিটিক্স।
ক্রমেই পরিষ্কার হচ্ছে, অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে জনগনের মুক্তির জন্য, অধিকারের জন্য আন্দোলন করা তখন পোষায়, যখন ক্ষমতায় একটি জনবান্ধব সরকার ও প্রশাসন থাকে, যখন রাষ্ট্র জনবান্ধব হয়।
যে রাষ্ট্র জনবান্ধব না, তাতে রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রশ্ন মোকাবিলা না করে ‘অধিকার’ প্রশ্ন ডিল করতে যাওয়া একটা ভ্যাবলামি।
রাষ্ট্র ও সরকার যখন জনবান্ধব না হয়, তখন রাষ্ট্র ও সরকার জনগনের দুনিয়ার বুকে বেঁচে থাকাকেই অধিকার মনে করে না। তারা মনে করে এটা তার করা করুনা। চাইলে তো সে এই গোলামের দলকে বাঁচিয়ে না রাখলেও পারে।
অর্থাৎ রাষ্ট্র/সরকার তখন নিজেকে খোদা মনে করতে শুরু করে।
অরাজনৈতিকভাবে এই মিথ্যা খোদার মোকাবিলা করা যে অসম্ভব, সেটা কোটা সংস্কার আন্দোলনে আবারও পরিষ্কার হয়ে উঠলো।
No comments:
Post a Comment